সর্বশেষ সংবাদ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

newsbarta logo.jpg

ম্যারাডোনার সই জাল করেছিলেন তাঁর চিকিৎসক

কেঁচো খুঁড়তে কি সাপ বেরিয়ে আসছে? আপাতত নিশ্চিত করে বলা না গেলেও গর্তে যে কিছু একটা আছে, তা কিন্তু বোঝা যাচ্ছে। এই ‘গর্ত’ আসলে ডিয়েগো ম্যারাডোনার জীবন।

ফুটবল মাঠে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি যতটা গোছাল ছিলেন, মাঠের বাইরে ঠিক ততটাই অগোছাল। ম্যারাডোনার এই অগোছাল জীবনের সুযোগ যে কতজন নিয়েছেন, তার ইয়ত্তা নেই।

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পরও কেউ সুযোগ নেওয়া বন্ধ করেনি। এমনকি ম্যারাডোনা মারা যাওয়ার পর তাঁর দীর্ঘদিনের চিকিৎসক লিওপোলদো লুকের বিপক্ষেও উঠছে অবহেলার অভিযোগ। তা নিয়ে তদন্তও চলছে।

আর এই ধারাবাহিকতায় উঠে এসেছে নতুন খবর—ম্যারাডোনার চিকিৎসা সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজে তাঁর সই নকল করেছিলেন লুক!

স্প্যানিশ সংবাদ সংস্থা ইএফই জানিয়েছে, ম্যারাডোনার মৃত্যুর প্রায় তিন মাস আগে তাঁর অতীত চিকিৎসার কাগজপত্র পেতে ম্যারাডোনার সই নকল করেছিলেন লুকু।

একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন স্বাস্থ্যালয়ে ’৮৬ বিশ্বকাপ কিংবদন্তির চিকিৎসার অতীত নথি পেতে এই কাজ করেছিলেন এই নিউরো সার্জন। তদন্তে এমন তথ্য পেয়েছেন আর্জেন্টিনার আদালত।

গত ২৫ নভেম্বর অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যান ম্যারাডোনা। আর লুক সুই জাল করেছিলেন ১ সেপ্টেম্বর—জানিয়েছে ইএফই।

ম্যারাডোনার মৃত্যুর পরও ঝড় থামেনি। তদন্ত চলছে তাঁর মৃত্যু নিয়ে
ম্যারাডোনার মৃত্যুর পরও ঝড় থামেনি। তদন্ত চলছে তাঁর মৃত্যু নিয়ে
ফাইল ছবি: রয়টার্স

তদন্ত কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থাটি, ‘একজন হাতের লেখা বিশারদ পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হয়েছেন, সইগুলো ম্যারাডোনা করেননি। সেগুলো ছিল জাল সই।’

ম্যারাডোনার মৃত্যুর প্রায় দুই মাস হয়ে গেলেও এ নিয়ে জল্পনাকল্পনা থামেনি। প্রথমে বলা হয়েছিল, হৃদ্‌রোগে ভুগে মারা গেছেন তিনি। কিন্তু পরে অভিযোগ উঠেছে, দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিগত চিকিৎসক লুক এবং নার্সরা তাঁকে ঠিকভাবে দেখভাল করেননি।

‘অনিচ্ছাকৃত নরহত্যা’র অভিযোগে তখন লুকের বাড়িঘর ও ক্লিনিক তল্লাশি করেছিল পুলিশ।

এ ছাড়া গত মাসে তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, মৃত্যুর পর সর্বশেষ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে (মৃত্যুর সময়) ম্যারাডোনার শরীরে কোনো মাদকের অস্তিত্ব মেলেনি। এমনকি অ্যালকোহলের অস্তিত্বও ধরা পড়েনি।

তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। ফুসফুস, কিডনি ও যকৃৎ পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিন্তু ম্যারাডোনাকে মৃত্যুর আগে নানা মানসিক সমস্যার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।

তবে লুকের বিপক্ষে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ কিংবা তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি। সম্ভাব্য হত্যা ধরে তদন্ত চলছে। গত ২৯ নভেম্বর লুকের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ নথি পায় পুলিশ। পরে সেগুলো বিশেষজ্ঞদের আওতায় নেওয়া হয়।

এর মধ্যে দুটি কাগজে একই টাইপরাইটারে একই লেখা দেখা যায়। বুয়েনস এইরেসের অলিভোস ক্লিনিককে ম্যারাডোনা লিখেছেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক লিওপোলদো লুককে অতীত চিকিৎসার সব তথ্য হস্তান্তরের জন্য। তৃতীয় কাগজটি ছিল মূল কাগজের স্ক্যান করা কপি, যেখানে ম্যারাডোনার সই ছিল।

আর্জেন্টিনায় ব্যক্তিগত তথ্যের ক্ষতিসাধন কিংবা কোনো রকম গড়াপেটা করা অপরাধ। লুকের বিরুদ্ধে এখন এই অভিযোগ গঠন হতে পারে। কে, কেন এবং কী কারণে করা হয়েছে, তা আমলে না নিয়েও শাস্তির রায় দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন আদালত।

Post a Comment

0 Comments